ডিসাইজিং কি? এর প্রয়োজনীয়তা- বিস্তারিত

ডিসাইজিং কি? এর প্রয়োজনীয়তা:  আসসালামু আলাইকুম, আমি জানি আপনারা ডিসাইজিং কি? এর প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে ধারণা নিতে অনলাইনে সার্চ করছেন। 

এখানে আপনি এই বিষয় সম্পর্কে সব জানতে পারবেন। তো আসুন আমরা জেনে নিই।

ডিসাইজিং কি?|  এর প্রয়োজনীয়তা

ডিসাইজিং কি? এর প্রয়োজনীয়তা

সুতা বা কাপড়ে মাড় দেয়াকে আমরা সাইজিং (Sizing) বলি। আর সুতা বা কাপড় থেকে মাড় উঠানোকে ডিসাইজিং (Desizing) বলা হয়। সাধারণত কাপড় বোনার (Weaving) সুবিধার জন্য টানা সুতায় (Warp) মাড় দেয়া হয়। 
কারণ বুননের সময় টানা সুতায় অনেক টান পড়ে। তাই টানা সুতা যাতে কাপড় বোনার সময় ছিঁড়ে না যায় সে জন্য শক্তিশালী করতে হয়। টানা সুতা শক্তিশালী করার জন্য মাড় (Sizing Material) ব্যবহার করা হয়।

ডিসাইজিং এর প্রয়োজনীয়তা
গ্রে-অবস্থায় মিল বা ফ্যাক্টরি থেকে আমরা যে কাপড় পেয়ে থাকি সে কাপড়ে যথেষ্ট পরিমাণে মাড় দেয়া থাকে। তাই ডাইং বা প্রিন্টিং করার পূর্বে কাপড়ের মাড় তোলা বা ডিসাইজিং করা একান্ত প্রয়োজন। 
কারণ গ্রে-কাপড়কে ডিসাইজিং না করলে ডাইং প্রিন্টিং কিংবা ফিনিশিং প্রক্রিয়াগুলিও বিঘ্ন ঘটে। তাই ওয়েট প্রসেসিং-এর প্রাথমিক পর্যায়ে ডিসাইজিং করা অত্যন্ত জরুরি। 

বিশেষ করে কটন কাপড়ের ওয়েট প্রসেসিং করার পূর্বে মাড় অবশ্যই দূর করতে হবে। কারণ কটন কাপড়ের জন্য স্টার্চ বা শ্বেতসার জাতীয় পদার্থ দ্বারা মাড় তৈরি করা হয়। এই স্টার্চ জাতীয় পদার্থগুলি সহজে স্কাওয়ারিং বা অন্যান্য ওয়েটিং এজেন্ট দ্বারা দূর করা যায় না। 

স্টার্চ ছাড়া অন্যান্য সাইজিং মেটারিয়াল যেমন সিনথেটিক আঁশের জন্য যে সমস্ত সাইজিং ব্যবহার করা হয় তা সহজেই পানি বা অন্যান্য স্কাওয়ারিং লিকারে দ্রবীভূত হয়ে যায়। সাধারণত দুটি প্রধান কারণে কটন কাপড়কে স্কাওয়ারিং করার পূর্বে ডিসাইজিং করা হয়।

ডিসাইজিং করার বিভিন্ন পদ্ধতি
টেক্সটাইল ম্যাটারিয়ালস ডিসাইজিং করার বেশ কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৪ (চার) টি সহজ পদ্ধতির মধ্যে দুটি নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।
১। পচন পদ্ধতি (Rot Steeping)
২। এনজাইম পদ্ধতি (Enzyme Treatment)
৩। এসিড (অম্ল) পদ্ধতি (Acid Steeping)
৪। ব্রোমাইট পদ্ধতি (Bromite Process)


১। পচন পদ্ধতি
এই পদ্ধতিটি বস্ত্র শিল্পের প্রাচীনতম এবং একটি সহজ পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে কোনো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না। বস্ত্রকে গরম পানিতে (৪০০ সেঃ) চুবিয়ে ভালো মতো ভিজিয়ে (যেন ১০০ % আর্দ্রতা বস্ত্রে থাকে) ২৪ ঘণ্টার জন্য রেখে দিতে হয়। উক্ত সময়ের মধ্যে এক ধরনের জীবাণু মাড় ভেঙ্গে ফেলে যাকে হাইড্রোলাইসিস বলে। 
তারপর কাপড়কে ভালো মতো ধোলাই বা ওয়াশ দিলে যথেষ্ট মাড় দূর হয়। এই পদ্ধতির অসুবিধা হলো এতে অনেক সময় লাগে। জায়গা বেশি লাগে, পানি অপচয় বেশি হয়। এ ছাড়া এ পদ্ধতিতে মাড় সম্পূর্ণরূপে দূরীভূত হয় না। তবে কোনো ধরনের রাসায়নিক দ্রব্যেও ব্যবহার ছাড়া শুধুমাত্র পানি ব্যবহার করে ডিসাইজিং করার এই পদ্ধতিটি অত্যন্ত সহজ।

২। এনজাইম পদ্ধতি (Entzynatic Process)
এই পদ্ধতিতে ডিসাইজিং করার জন্য কোনো ভালো এনজাইম ব্যবহার করা হয়। এই এনজাইম সাধারণত প্রাণিজ এবং উদ্ভিদ থেকে তৈরি করা হয়। পানির সাথে নির্দিষ্ট পরিমাণ এনজাইম মিশ্রিত করে দ্রবণটি গরম করা হয়। 
এই দ্রবণের তাপমাত্রা ৬০ - ৭০ ডিগ্রী সেঃ রাখতে হয়। উক্ত তাপমাত্রায় এনজাইম কাপড়ের মাড়ের সাথে ক্রিয়া করে তাকে হাইড্রোলাইস করে ভেঙে পানি করে ফেলে। এই পদ্ধতিটি ডিসাইজিং-এর জন্য একটি অত্যন্ত সফল পদ্ধতি।


আশা করি ডিসাইজিং কি? এর প্রয়োজনীয়তাএই বিষয়টি আপনি বুঝতে পেরেছেন। যদি এই পোস্টটি থেকে কিছুটা উপকার হয়ে থাকে, তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। "ধন্যবাদ"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন