'এখন প্রেম' গল্পে লেখক একটা বিশেষ সময়ের প্রতি যে ইঙ্গিতবহ অভিমত পোষণ করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো - আসল ব্যাখা

'এখন প্রেম' গল্পে লেখক একটা বিশেষ সময়ের প্রতি যে ইঙ্গিতবহ অভিমত পোষণ করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো: আসসালামু আলাইকুম স্বাগতম জানাচ্ছি লাখ পড়া মাইমুনা তে। 

আমি জানি আপনারা “'এখন প্রেম' গল্পে লেখক একটা বিশেষ সময়ের প্রতি যে ইঙ্গিতবহ অভিমত পোষণ করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো” বিষয়ে ধারণা নিতে অনলাইনে খোজাখুঝি করছেন। এখানে আপনি এই বিষয়টি সম্পর্কে সব ভালো ভাবে জানতে পারবেন। 

'এখন প্রেম' গল্পে লেখক একটা বিশেষ সময়ের প্রতি যে ইঙ্গিতবহ অভিমত পোষণ করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো

'এখন প্রেম' গল্পে লেখক একটা বিশেষ সময়ের প্রতি যে ইঙ্গিতবহ অভিমত পোষণ করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো

“বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ।” জনৈক মনীষীর এ বক্তব্য সাম্প্রতিক ব্যস্ততাময় জনজীবনের প্রতি দৃকপাত করলে সহজেই এর সত্যতা মেলে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে মানুষের জীবন ক্রমেই এত বিজ্ঞান নির্ভর হয়ে পড়ছে তাতে মনের সাধারণ আবেগ অনুভূতিগুলি প্রায় বিলুপ্ত হতে বসেছে। এখন আর শোকে কিংবা দুঃখে তেমন ভাবে চোখে জল আসে না, আনন্দ বা প্রাপ্তিতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে হাসতেও ভুলে যাচ্ছি। শুধু পাওয়ার নেশায় মানুষ এত ব্যাকুল ভাবে ছুটে চলেছে তাতে পাশের আত্মীয় পরিজনদের প্রতি আকর্ষণ বোধও প্রায় নিঃশ্বেষিত। কেবল যান্তব আচরণে উন্মত্ত হয়ে মানুষ আজ মান-হুষ-কে বিসর্জন দিতে বসেছে। এখান থেকে ‘ফিরিবার পথও নাই' এমনই সময় ‘প্রেম’ বলতে—এক ধরনের আবেগ, ইংরেজিতে যাকে বলে Passion, মনের এক বিশেষ অনুভূতি। 

এই প্রেম সম্পর্কে একালের এক বিশিষ্ট সাহিত্যিকের অভিমত “প্রেম বলতে এখন বিশেষ কিছু নেই, সত্যিকারের প্রেম মৃত প্রায়।” এ সম্পর্কে আরও একটু পরিষ্কার করে বলা যায়—হয়ত প্রেম নামক অনুভূতিটি অমর। কিন্তু সমাজ-সংসারের প্রতিকূল পরিস্থিতির চাপে পড়ে তা আজ মরতে বসেছে। বোধ করি তেমনই এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চেয়েছেন—‘এখন প্রেম' নামক গল্পের লেখক। 'সীতেশ’ আর ‘কৃষ্ণা' দুজন দুজনকে ভালোবাসে, প্রেম নামক অনুভূতির নিগড়ে আবদ্ধ। দুজনেই চাকুরিজীবী, দুজনেই নিজের নিজের সংসারের স্তম্ভ স্বরূপ। প্রেমে পড়ার পূর্বে তারা ছিল একেবারে অপরিচিত। কিন্তু এই প্রেমের আকর্ষণে তারা একে অপরের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে।

অবসর সময়ে শহরের রাস্তায় এক সাথে ঘোরা, নির্জনে বসে মনের কথা বিনিময় তারপর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার উদ্গুর প্রয়াস পেশ করা সীতেশের দিক দিয়ে কোনো বাধা না থাকলেও কৃষ্ণার দিক থেকে প্রবল বাধা ছিল তার মা। 

বাবা নেই, মা ও কয়েকজন ভাই বোনকে নিয়ে সংসার পরিচালনা করতে হয় কৃষ্ণাকে নিজেই। বিয়ের পর কৃষ্ণা পর হয়ে যাবে, সংসারের আয়ের পথ বন্ধ হবে এই ভেবে কৃষ্ণার মা হয়তো তাদের বিয়েকে এখন সমর্থন করতে নারাজ। অথচ পূর্বে কৃষ্ণার মা সীতেশকে কত আদর আপ্যায়ন করত, নিজের পরিবারের একজন বলে ভাবতো। 

যখন কৃষ্ণারা সপরিবারে ভাড়াটিয়া হয়ে সীতেশদের পাড়াতে এসে চেপে ছিল, অজানা স্থানে লোকবলের অছিলায় হয়তো সীতেশকে তাদের বাড়ির ছেলে হিসাবে মেনে নিয়েছিল। কৃষ্ণা চাকরি পাবার পর অন্যত্র উঠে গেছে। সীতেশ মাঝে মধ্যে তাদের বাড়িতে উপজাচক হয়ে উপস্থিত হলে কৃষ্ণার মা তেমনভাবে আর কদর করে না, তথাপি সীতেশ ও কৃষ্ণার মধ্যে প্রেমের স্রোত এখনও মন্দীভূত হয়নি।

আগের দিন দুজন একসাথে সিনেমার টিকিট কেটেছে পরদিন বিকালের শো দেখবে কিন্তু বহুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সীতেশ দেখল কৃষ্ণা আসছে না, টিকিট দুটো ব্ল্যাকে বিক্রি করে দিয়ে বিষাদ মনে বাড়িতে ফিরে ফোন মারফত সীতেশ জানতে পারে পাড়াতে দুই দলের মধ্যে ভীষণ হট্টগোলের ফলে কৃষ্ণা আসতে পারেনি। 

কৃথ্বার বিনা অনুমতিতে অপিস শেষে সীতেশ কৃথ্বাদের বাড়িতে এসে হাজির হয়। কৃষ্ণা ও তার মা সীতেশের এ হেন আচরণে খুশি নয়। কারণ পুলিশি ধড়পাকড়ের ফলে কৃষ্ণার ভাই ঘর ছাড়া, আবার হয়তো সন্ধ্যার প্রাক্কালে খণ্ডযুদ্ধ শুরু হবে সীতেশ তাহলে বাড়ি ফিরবে কেমন করে ? 

নিভৃত ঘরে বসে উভয়ের ভাব বিনিময়, চা পান; শেষে যখন সীতেশ ফেরার জন্য পা বাড়িয়েছে তৎক্ষণাৎ কানে এলো আগের দিনের মতো বোমাবাজির শব্দ। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশীরা যে যার ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করতে থাকল। মুহুর্মুহু শোনা গেল বোমা, গোলাগুলি আর পুলিশের গাড়ির শব্দ। অগত্যা অবস্থা বুঝে সীতেশের আর ফেরা হল না, সিদ্ধান্ত নিতে হল কৃথ্বাদের বাড়িতে রাত্রিবাস।

রাত্রের খাওয়া শেষে কৃষ্ণার ভায়ের বিছানায় সীতেশকে আশ্রয় নিতে হল । ক্রমেই রাত্রি গভীর হতে হতে বাইরের গণ্ডগোল স্তিমিত হয়ে থাকল। চারিদিক যখন নিঝুম, কৃষ্ণা সীতেশকে এক গ্লাস জল খাওয়াতে এসে উভয়ের মধ্যে ঘটে যায় আমূল পরিবর্তন। তাদের প্রেম ডানা মেলে উড়তে চায়। 

সীতেশ—“কৃষ্মার শরীরের কাছে আরও ঘন হয়ে আস্তে আস্তে মুখ নামিয়ে আনে। একটি ওষ্টাধর আরেকটি ওষ্টাধরে এসে পৌঁছায়...।” কিন্তু এখানেই তাদের থামতে হয়। অকস্ম্যাৎ বাইরের নিস্তব্ধতা ভেঙে গর্জে ওঠে পুলিশের রাইফেল আর বোমা। দুজনে ভয়ে ছিটকে সরে যায়। 

খোলা জানালা দিয়ে তারা বাইরে দেখতে পায় পুলিশ একটা ডেডবডি টানতে টানতে গাড়িতে তুলছে। এ হেন পরিস্থিতিতে তাদের প্রেম পূর্ণতা পেল না। সারারাত্রি তাদের বসে থাকতে হল তন্দ্রাহীন চোখে নতুন সূর্যোদয়ের প্রতীক্ষায়। তারা হয়তো জানেনা যে সময়ের মধ্যে দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে কোনো দিনও সার্থক হবে না। অর্থাৎ প্রেম এখন মাধুর্যহীন।

আশা করি আমার ভাই বোনের এই পোস্টটি অনেক ভালো লেগেছে। এর সাথে 'এখন প্রেম' গল্পে লেখক একটা বিশেষ সময়ের প্রতি যে ইঙ্গিতবহ অভিমত পোষণ করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো বিষয়টিও তোমরা বুঝতে পেরেছ। যদি এই পোস্টটি থেকে কিছু উপকার পাও, তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে কখনো ভুলবেন না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন