খিজির খাঁ (১৪১৪-'২১ খ্রিঃ) | সৈয়দ বংশ (১৪১৪-১৪৫১ খ্রিঃ) - আসল ব্যাখা

খিজির খাঁ (১৪১৪-'২১ খ্রিঃ) | সৈয়দ বংশ (১৪১৪-১৪৫১ খ্রিঃ): আসসালামু আলাইকুম ভাই ও বোনেরা আপনারা কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন, আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি, আপনাদের স্বাগতম জানাচ্ছি লাখ পড়া মাইমুনা তে। আমার নাম মাইমুনা, আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা আপনাদের বিভিন্ন জায়গায় লাগতে পারে। 

আমি জানি আপনারা “খিজির খাঁ (১৪১৪-'২১ খ্রিঃ) | সৈয়দ বংশ (১৪১৪-১৪৫১ খ্রিঃ)” বিষয়ে ধারণা নিতে অনলাইনে খোজাখুঝি করছেন।আর আপনি এখন একদম সঠিক পোস্ট এ আছেন। এখানে আপনি এই বিষয়টি সম্পর্কে সব ভালো ভাবে জানতে পারবেন। 

খিজির খাঁ (১৪১৪-'২১ খ্রিঃ) | সৈয়দ বংশ (১৪১৪-১৪৫১ খ্রিঃ)

খিজির খাঁ (১৪১৪-'২১ খ্রিঃ) :

'তারিখ-ই-মুবারকশাহি' গ্রন্থের মতে, খিজির খাঁ ছিলেন হজরত মহম্মদের বংশধর। এই কারণে তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ সৈয়দ বংশ নামে পরিচিত হয়। ড. নিজামীর মতে, খিজির প্রকৃতই সৈয়দ ছিলেন কিনা তা প্রমাণ করা কঠিন। তাঁর পূর্বপুরুষেরা আরবদেশ থেকে এসেছিলেন—এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। যাই হোক্, খিজির মুলতানের শাসক মর্দান খাঁ-র তত্ত্বাবধানে সাহিত্য ও সামরিক শিক্ষালাভ করেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি সামরিক পারদর্শিতা দেখান। 

দৌলত খাঁ'র পুত্রের মৃত্যুর পর সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক খিজির খাঁ’কে মুলতানের ‘জায়গির’ অর্পণ করেন। পরে মন্নু ইকবালের ভ্রাতা সারঙ্গ খাঁ মুলতান দখল করে নিলে খিজির মেওয়াটে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তৈমুর লঙ ভারত আক্রমণ করলে খিজির খাঁ ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় তৈমুরের সাথে যোগ দেন। 

পুরস্কার হিসেবে তৈমুর ভারত ত্যাগের প্রাক্কালে খিজির খাঁকে দিল্লিতে তাঁর প্রতিনিধি নিয়োগ করেন। তবে সেই মুহূর্তে মুলতান, দিপালপুর ও সিন্ধুর একাংশ ছাড়া অন্যত্র খিজিরের কর্তৃত্ব স্বীকৃত হয়নি। পরে দিল্লির রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অভিজাতদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সুযোগে তিনি সিংহাসন দখল করেন। সিংহাসনে বসেই তিনি শাসনসংস্কারে মন দেন। অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজের বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের বসান। মহম্মদ-বিন্-তুঘলকের আমলের দক্ষ অভিজাতদেরও তিনি দায়িত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করেন।


খিজির খাঁ আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করতেন যে, তৈমুর লঙের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া তাঁর ভাগ্যের এই পরিবর্তন সম্ভব হত না। তাই তিনি তৈমুরের পুত্র শাহরুখ খানের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখেন। তিনি কখনোই ‘সুলতান’ উপাধি গ্রহণ করেননি। পরিবর্তে নিজেকে 'রায়ত-ই-আলা 'উপাধিতে ভূষিত করেন। 

নিজনামে মুদ্রাও তিনি চালু করেননি। উচ্চাকাঙ্ক্ষী তুর্কি ও আফগান আমিরদের শত্রুতার বিরুদ্ধে তৈমুরবংশের প্রতি এই আনুগত্যকে তিনি 'রক্ষাকবচ' হিসেবে ব্যবহার করে অবশ্যই কূটনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিলেন।


খিজির খাঁ দিল্লির মসনদ দখল করেছিলেন। কিন্তু দিল্লি-সুলতানির সেই ভৌমিক বিস্তৃতি বা রাজনৈতিক স্থিতি—কিছুই তখন অবশিষ্ট ছিল না। খিজিরের কর্তৃত্ব দিল্লি ছাড়া দোয়াব ও মেওয়াটে একাংশের ওপর সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। এই ছোট্ট অংশের প্রাপ্য রাজস্ব থেকে অভ্যন্তরীণ বা বৈদেশিক ক্ষেত্রে কোনো বড়ো পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব ছিল না। তাই প্রথমেই তিনি পার্শ্ববর্তী কয়েকটি অঞ্চলকে বশীভূত করে বার্ষিক রাজস্বের পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। 

তাঁর মন্ত্রী তাজ উল-মুল্ক এই উদ্দেশ্যে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেন। কাটিহার, এটাওয়া, খোর, কাম্পিল, পাতিয়ালি, গোয়ালিয়র, বায়ানা প্রভৃতি অঞ্চলের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে স্থানীয় শাসকদের আনুগত্য ও বার্ষিক রাজস্বের প্রতিশ্রুতি পান। অবশ্য এই আনুগত্য সম্পূর্ণভাবে মৌখিক এবং অল্পস্থায়ী। সিরহিন্দ ও বদাউনের বিদ্রোহী তুর্কিদের বিরুদ্ধেও তিনি সাময়িক সাফল্য অর্জন করেন। এটাওয়া অভিযানের সময় খিজির অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেখান থেকে দিল্লি প্রত্যাবর্তনের কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি মারা যান। (২০ মে, ১৪২১ খ্রিঃ)।


খিজির খাঁ প্রশংসনীয় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন। ইয়াহিয়া সিরহিন্দি লিখেছেন: “তিনি ছিলেন দয়ালু, সাহসী, নম্র এবং প্রতিশ্রুতি ও কর্তব্যের প্রতি বিশ্বস্ত।” ফেরিস্তার মতে: “খিজির খাঁ ছিলেন মহৎ ও পণ্ডিত শাসক। নিজ কর্তব্যে অবিচল। 

তাঁর প্রতি সাধারণের ভালোবাসা এত গভীর ছিল যে, মৃত্যুর পরেও তিন দিন উচ্চ-নীচ, ধনী-দরিদ্র, প্রভু-ভৃত্য সবাই তাঁর জন্য শোক পালন করেছিলেন।” ড. মজুমদার তাঁর ব্যক্তিচরিত্রের প্রশংসা করে লিখেছেন : “He (Khizir) was wise, just and benevolent, and was free from the vices common on those days.” প্রকৃত সৈয়দদের মতোই ছিল তাঁর ধর্মীয় জীবন ও আচার-আচারণ। অকারণে রক্তপাত কিংবা শত্রুর প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ তিনি কখনোই সমর্থন করেননি। 

ড. ঈশ্বরীপ্রসাদের মতে, খিজির খাঁ শাসক হিসেবে সাফল্যের পরিচয় দিতে পারেননি। তবে এজন্য তাঁকে সম্পুর্ণভাবে দায়ী করা যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ দিল্লি-সুলতানির এক ভঙ্গুর ও অস্থির অবস্থায় তিনি ক্ষমতা পেয়েছিলেন। তাঁর পূর্ণ উদ্যোগ ও সময় ব্যয়িত হয়েছিল শান্তিশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজে। স্বভাবতই কার্যকর প্রশাসনিক সংস্কারসাধনের যথেষ্ট সময় তিনি পাননি।

সৈয়দ বংশ (১৪১৪-১৪৫১ খ্রিঃ) :

তুঘলক বংশের শেষ সুলতান নাসিরউদ্দিন মামুদের মৃত্যুর পর দিল্লির আমির ও মালিকরা জনৈক অভিজাত দৌলত খাঁকে দিল্লির শাসক মনোনীত করেন (১৪১২-'১৩ খ্রিঃ)। সিংহাসনে তাঁর কোনো বৈধ অধিকার ছিল না। কোনো রাজতান্ত্রিক ঐতিহ্যও তাঁর ছিল না। 

স্বভাবতই অভিজাতদের সার্বিক সমর্থক থেকে তিনি শীঘ্রই বঞ্চিত হন। দিল্লির অভিজাতদের একাংশ তৈমুরের প্রতিনিধি ও মুলতানের শাসক খিজির খাঁ কে দিল্লি দখলের পরামর্শ দেন। খিজির খাঁ ১৪১৪ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে সসৈন্যে দিল্লিতে উপস্থিত হন। প্রায় চার মাস অবরুদ্ধ থাকার পর দৌলত খাঁ আত্মসমর্পণ করেন (৬ জুন, (১৪১৪ খ্রিঃ)। সিংহাসনে বসেন খিজির খাঁ সৈয়দ।

আশা করি আমার ভাই বোনের এই পোস্টটি অনেক ভালো লেগেছে। এর সাথে খিজির খাঁ (১৪১৪-'২১ খ্রিঃ) | সৈয়দ বংশ (১৪১৪-১৪৫১ খ্রিঃ) বিষয়টিও তোমরা বুঝতে পেরেছ। যদি এই পোস্টটি থেকে কিছু উপকার পাও, তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে কখনো ভুলবেন না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন