রিসালাত কাকে বলে? রিসালাতের গুরুত্ব এবং বিশ্বাস: আসসালামু আলাইকুম, আমি লিছা, আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা। আমি জানি আপনারা “রিসালাত কাকে বলে? রিসালাতের গুরুত্ব এবং বিশ্বাস” বিষয়ে ধারণা নিতে অনলাইনে সার্চ করছেন।
তাহলে আপনি এখন সঠিক পোস্ট এ আছেন। এখানে আপনি এই বিষয় সম্পর্কে সব জানতে পারবেন। তো আসুন আমরা জেনে নিই।
রিসালাত কাকে বলে? রিসালাতের গুরুত্ব এবং বিশ্বাস
ইমানের সাতটি মৌলিক বিষয়ের অন্যতম হলো রিসালাত। ইসলামি পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালার বাণী মানুষের কাছে পৌছে দেওয়ার দায়িত্বকে রিসালাত বলে। নবি-রাসুলগণ এ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই বলা যায়, তাদের দায়িত্বই হলো রিসালাত।
রিসালাত আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো বার্তা, চিঠি পৌছানো, পয়গাম, সংবাদ বা কোনো ভালো কাজের দায়িত্ব বহন করা।
রিসালাতের গুরুত্ব
আল্লাহ তায়ালার একত্বের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা যেমনি আবশ্যক তেমনিভাবে রিসালাতের প্রতিও ঈমান আনা অপরিহার্য।
আমরা আল্লাহর একত্ব, তাঁর অস্তিত্ব এবং পরিচয় নবী-রাসূলগণের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি।
নবী-রাসূল ও রিসালাতের প্রতি অবিশ্বাস করলে আল্লাহর প্রতিই অবিশ্বাস করা হয়। তাই আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের পাশাপাশি রিসালাতের প্রতিও বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে।
রিসালাতে বিশ্বাস ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। রিসালাতের প্রতি ঈমান আনা তাওহীদের প্রতি ঈমান আনার মতোই অপরিহার্য।
রিসালাতে বিশ্বাসের অর্থ
রিসালাতের প্রতি বিশ্বাসের মানে হচ্ছে এ বিশ্বাস স্থাপন করা যে, নবী-রাসূলগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষকে পথ প্রদর্শন করার জন্যে প্রেরিত; আরও বিশ্বাস করা যে, তাঁরা আল্লাহর পক্ষ থেকে যে বাণী ও জীবন বিধান নিয়ে এসেছেন তা তাঁরা রচনা করেননি; আল্লাহই তা রচনা করেছেন।
তাঁদের প্রচারিত জীবনব্যবস্থা মানবজীবনে ও সমাজে বাস্তবায়িত হলে সত্যিকার কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত হবে, তা মনে প্রাণে বিশ্বাস করা, তাঁদের প্রচারিত জীবনব্যবস্থাকে রক্ষা করা, তাঁদের পরিপূর্ণ আনুগত্য করা, সমাজে তা বাস্তাবায়ন করার জন্যে চেষ্টা ও সংগ্রাম করা।
নবি রাসুল প্রেরণের উদ্দেশ্য?
আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য অগণিত নবি রাসুল প্রেরণ করেছেন। তাঁদের উদ্দেশ্যহীনভাবে দুনিয়ায় প্রেরণ করা হয়নি বরং তাঁরা নবুয়ত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালন করেছেন নবুয়ত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালনের জন্য তাঁদের বেশ কিছু কাজ করতে হতো। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কতিপয় কাজ হলো তাঁরা মানুষের নিকট আল্লাহ তায়ালার পরিচয় তুলে ধরতেন। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালার জাত সিফাক ক্ষমতা নিয়ামত ইত্যাদি বিষয়ের কথা মানুষের নিটক প্রকাশ করেতেন৷
সত্য ও সুন্দর জীবনের দিকে আহবান জানাতেন। আল্লাহ তায়ালার ইবাদাত ও ধর্মীয় নানা বিধি বিধান শিক্ষা দিতেন।
পরকাল সম্পর্কে ধারণা প্রদান করতেন।
পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার মনোনীত বান্দা৷ আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং তাঁদের নবুয়ত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচিত করেছেন৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন
اَللّٰهُ يَصْطَفِىْ مِنَ الْمَلٰٓءِكَةِ رُسُلًاوَّمِنَ النَّـاسِ اِنَّ اللّٰهُ سَمِيْعٌ بَصِيْرٌ٥
অর্থঃ আল্লাহ তায়ালাই ফেরশতাদের মধ্যে থেকে এবং মানুষের মধ্যে থেকেও রাসুল মনোনীত করেন
আল্লাহ তো সর্বশ্রোতা সম্যক দ্রষ্টা৷ (সূরা আল হাজ্জ আয়াত ৭৫)
সুতরাং মনোনীত বান্দা হিসেবে নবি রাসুলগণ বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন৷ প্রথমত তাঁরা ছিলেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাসী৷ সবধরনের কথায় ও কাজে তাঁরা আল্লাহ তায়ালার নির্দেশের অনুসরণ করতেন৷ আল্লাহ তায়ালার পূর্ণ আনুগত্যই ছিল তাঁদের প্রধান বৈশিষ্ট্য৷
নবি রাসুলগণ ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানী বুদ্ধিমান সুবিবেচক ও বিচক্ষণ। তাঁরা ছিলেন নিষ্পাপ। তাঁরা সবধরনের পাপ পঙ্কিলতা থেকে পবিত্র ছিলেন। স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা তাঁদের সকল প্রকার অন্যায় ও অশ্লীলতা থেকে বাঁচিয়ে রাখতেন। হযরত ইউসুফ (আ.) ছিলেন একজন প্রসিদ্ধ নবি। তাঁর সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন আমি তাঁকে মন্দ কাজ ও অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখার জন্য এভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম। সে তো চিল আমার বিশুদ্ধচিত্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা ইউসুফ আয়াত ২৪)।
নবি রাসুলগণ ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী। সকল সৎগুণ তাঁরা অনুশীলন করতেন। তাঁরা ছিলেন অত্যন্ত সৎ সত্যবাদী ন্যায়পরায়ণ। দয়া ক্ষমা ধৈর্য ইত্যাদি সব ধরনের মানবিক গুণ তাঁদের চরিত্রে বিদ্যমান ছিল। মিথ্যা প্রতারণা পরনিন্দা হিংসা বিদ্বেষ ইত্যাদি খারাপ স্বাভাবের লেশমাত্র তাঁদের চরিত্রে কখনোই ছিল না। বরং তাঁরা ছিলেন সৎস্বভাবের জন্য মানবতির অনুপম আদর্শ।
কর্তব্যনিষ্ঠা ও দায়িত্ব পালনে নবি রাসুলগণ ছিলেন অতুলনীয়। নবুয়ত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তাঁরা বিন্দুমাত্র অলসতা ও উডসীতা প্রদর্শন করেনরি। বরং এজন্য কাফিরদের বহু অত্যাচার ও উপসীনতা প্রদর্শন করেননি। বরং এজন্য কাফিরদের বহু অত্যাচার ও নিপীড়ন ধৈর্যসহকারে সহ্য করেছেন। কিন্তু তারপরও তাঁরা যথাযথভাবে মানুষের নিকট আল্লাহ তায়ালার বাণী পৌঁছিয়েছেন তাঁরা ছিলেন রির্লোভ ও রিঃস্বার্থ। পার্থিব কোন লাভের আশায় তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব থেকে কখনো পিছপা হননি। কাফিরবা ইসলামের দাওয়াত প্রচার বন্ধ করার জন্য তাঁদের নানা প্রলোভন দেখাত। কিন্তু তাঁরা পার্থিব স্বার্থের কাছে মাথা নত করেননি। দীন প্রচারে নবি রাসুলগণ ছিলেন ত্যাগের মূর্ত প্রতীক।
বিনা দ্বিতীয় পার্থিব আরাম আয়েশ ভোগ বিলাস ধন সস্পদ তাঁরা আল্লাহ নির্দেশে ত্যাগ করেতেন।দীন প্রচারের স্বার্থে প্রিয়নবি (স.) বাড়ি ঘর আত্মীয় স্বাজন এমনকি নিজ দেশ মক্কা ত্যাগ করে মদিনায় হিজরত করেছিলেন। নবি রাসুলগণের জীবনীতে ত্যাগের এরকম আেও অসংখ্য উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায়।
নবুয়তের ধারা
আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য নবি রাসুল প্রেরণ করেছেন। সর্বপ্রথম নবি ছিলেন হযরত আদম (আ.) আর সর্বশেষ নবি ও রাসুল হলেন হযরত মুহাম্মদ (স.) এঁদের মাঝখানে আল্লাহ তায়ালা আরও বহু নবি রাসুল প্রেরণ করেছেন। নবি রাসুলদের আগমনের এই ধারাবাহিকতাই নবুয়তের ক্রমধারা বলা হয়। দুনিয়াতে আগত সকলে গোষ্ঠী বা জাতির জন্যই আল্লাহ তায়ালা নবি রাসুল বা পথপ্রদর্শনকারী পাঠিয়েছেন।
وَلِـكُلِّ قَوْمٍ هَادٍ٥
অর্থঃ আর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যই পথপ্রদর্শক রয়েছে। (সূরা আর রাদ আয়াত ৭)।
তাঁরা মানুষকে এক আল্লাহ তায়ালার দিকে ডাকতেন। সত্য ও সুন্দর জীবনবিধান তথা আল্লাহর দীন অনুসরণের নির্দেশ দিতেন। সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত শরিয়ত তথা দীনের বিধি বিধান এক রকম ছিল না। বরং মানবজাতির পরিবেশ পরিস্থিতি সভ্যতা সংস্কৃতি ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন শরিয়ত দেওয়া হতো। নবি রাসুলগণ তা মাননসমাজে বাস্তবায়ন করতেন। তবে সব নবি রাসুলের দীনের মৌলিক কাঠামো ছিল এক ও অভিন্ন।
আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদ বা তাওহিদ ছিল সবারই প্রচারিত দীনের মূলকথা। হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে আগত সকল নবি রাসুলই এ দীন প্রচার করেছেন হযরত নূহ (আ.) হযরত ইবরাহিম (আ.) হযরত মুসা (আ.) হযরত দাউদ (আ.) হযরত ঈসা (আ.) সকলেই এই একই দীন ও শিক্ষা প্রচার করেছেন। আমাদের প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মদ (স.) ছিলেন নবুয়তের ধারার সর্বশেষ নবি। তাঁর পরে আর কোন নবি আসেননি আসবেনও না। সুতরাং আল্লাহ তায়ালা তাঁর মাধ্যমে দীনের পূর্ণতা প্রদান করেন।আল্লাহর তায়ালা ঘোষণা করেন
اَلْيَوْمَ اَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَاَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِىْ وَرَضِيْتُ لَـكُمُ الْاِسْلَامَ دِيْنًـا
অর্থঃ আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম তোমাদের উপর আমার নিয়ামত পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে দীন হিসেবে মনোনীত করলাম। (সূরা আল মায়িদা আয়াত ৩) এভাবে দীনের বিধি বিধান পূর্ণতা প্রাপ্তির ফলে নবি রাসুলগণের আগমনের ধারাও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নবুয়তের ধারাও পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়। মানুষের হিদায়েতের জন্য আগমনকারী এসব নবি রাসুল সকলেই ছিলেন আল্লাহ তায়ালার মনোনীত বান্দা। তাঁদের সকলের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা অপরিহার্য। আল্লাহ তায়ালা বলেন
اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بُمَـآ اُنْزِلَ اِلَيْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَالْمُؤْنَ كُلٌّ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَمَلٰٓءِكَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ لَانُفَرِّقُ بَيْنَ اَحَدٍمِّنْرُّسُلِهٖ
অর্থঃ রাসুল তাঁর প্রতি প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে ইমান এনেছেন এবং মুমিনগণও। তাদের সবাই আল্লাহ তাঁর ফেরেশতাগণ তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসুলগণে ইমান এনেছে। তারা বলে আমরা তাঁর রাসুলগণের মধ্যে কোন তারতম্য করি না। (সূরা আল বাকারা আয়াত ২৮৫)
নবুয়তের ধারায় আগমনকারী সব নবি রাসুলকে বিশ্বাস করা ইমানের অপরিহার্য শর্ত। এঁদের কাউকে বিশ্বাস এবং কাউকে অবিশ্বাস করা যাবে না। বরং সকলকেই আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত নবি রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতে হবে। নবি রাসুল হিসেবে যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দিতে হবে। কারও প্রতিই কোনরূপ ঠাট্টা বিদ্রূপ বা কটাক্ষ করা যাবে না।
নবুয়তের ধারার সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি ছিলেন আমাদের প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মদ (স.) তিনি ছিলেন অনন্য বৈশিষ্টের অধিকারী।
দুনিয়াতে আগমনকারী সব নবি রাসুলই কোন বিশেষ গোত্র বিশেষ দেশ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (স.) ছিলেন সারা বিশ্বের সকল স্থানের সকল মানুষের নবি। তিনি বিশ্বনবি।
আল্লাহ তায়ালা বলেন
قُلْ يٰٓاَيُّهَا النَّـاسُ اِنِّىْ رَسُوْلُ اللّٰهِ اِلَيْكُمْ جَمِيْعًاجَمِيْعًا
অর্থঃ (হে নবি) আপনি বলুন হে মানবমুন্ডলী আমি তোমাদের সকলের জন্যই আল্লাহর রাসুল হিসেবে প্রিরিত। (সূরা আল আরাফ আয়াত ১৫৮)
রাসুলুল্লাহ (স.) ছিলেন সর্বকালের নবি। কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ আগমন করবে সকলের নবি তিনিই। তাঁর শিক্ষা আদর্শ ও আনীত কিতাব আল কুরআন সকলকেই অনুসরণ করতে হবে। তিনি রহমতের নবি। মানবজাতির জন্য তিনি আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নিয়ামত ও অনুগ্রহ স্বরূপ। আল্লাহ তায়ালা বলেন
وَمَٓا اَرْسَلْنٰكَ اِلَّارَحْمَةًلِّلْعٰلَمِيْنَ٥
অর্থঃ (হে নবি) আমি তো আপনাকে বিশ্বজগতের প্রতি কেবল রহমতরূপেই প্রেরণ করেছি। (সূরা আল আম্বিয়া আয়াত ১০৭)
অতএব আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (স.) ছিলেন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি। হযরত মুহাম্মদ (স.) কে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি হিসেবে বিশ্বাস করা প্রত্যেক মুসলমানের ইমানি কর্তব্য। হযরত মুহাম্মদ (স.) ছিলেন সর্বশেষ নবি। তাঁর মাধ্যমে দীনের পূর্ণতা ঘোষিত হয় এবং নবুয়তের ধারা সমাপ্ত হয়। তিনি নবি রাসুলগণের ধারায় সর্বশেষে আগমন করেছেন। আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং তাঁকে খাতামুন নাবিয়্যন তথা সর্বশেষ নবি বলে অভিহিত করেছেন।
খাতামুন অর্থ শেষ সমাপ্তি। আর নবুয়ত হল নবিগণের দায়িত্ব। সুতরাং খতমে নবুয়তের অর্থ নবিয়তের সমাপ্তি। আর যার মাধ্যমে নবুয়তের ধারার সমাপ্তি ঘটে তিনি হলেন খাতামুন নাবিয়্যিন বা সর্বশেষ নবি। আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য নবি রাসুল প্রেরণ করেছেন। এঁদের মধ্যে সর্বপ্রথম ছিলেন হযরত আদম (আ.)। আর সর্বশেষ ছিলেন হযরত মুহাম্মদ (স.)। হযরত মুহাম্মদ (স.) এর মাধ্যমে নবি রাসুলগণের আগমনের ধারা শেষ বা বন্ধ হয়ে যায়। সুতরাং তিনিই সর্বশেষ নবি বা খাতামুন নাবিয়্যিন। আল্লাহ তায়ালা বলেন
مَا كَانَ مُحَمَّدٌ اَبَآاَحَدٍمِّنْ رِّجَـا لـِكُمْ وَلٰـكِنْ رَّسُوْلَ اللّٰهِ وَجـَا تَمَ النَّبِيّٖنَ
অর্থঃ মুহাম্মদ তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নন বরং তিনি আল্লাহর রাসুল এবং শেষ নবি। (সূরা আল আহযাব আয়াত ৪০)। খাতামুন শব্দের অন্যতম অর্থ সিলমোহর। কোন কিছুতে সিলমোহর তখন অঙ্গিত করা হয় তখন তক পূর্ণ হয়ে যায়। সিলমোহর লাগানোর পর তাতে কোন কিছু প্রবেশ করানো যায় না। নবুয়তের সিলমোহর হল নবুয়তের পরিসমাপ্তির ঘোষণা। নবুয়তের দায়িত্বের পরিসমাপ্তি ঘোষণা।
অর্থাৎ নতুনভাবে কোন ব্যক্তি নবি হতে পারে না এবং নবুয়তের ধারায় প্রবেশ করতে পারবে না। এটাই হলো খতমে নবুয়তের মূল কথা। আমাদের প্রিয় নবি(স.) হলেন খাতামুন নাবিয়্যিন। তিনি সর্বশেষ নবি। তাঁর পরে আর কোন নবি নেই তাঁর পরে আজ পর্যন্ত কোন আসেননি। কিয়ামত পর্যন্ত আসবেনও না। তাঁর পরবর্তীতে যারা নবুয়ত দাবি করেছে তারা সবাই ভন্ড মিথ্যাবাদী ও প্রতারক। কেননা মহানবি (স.) বলেছেন
اَنَا خَاتَمُ النَّبِيّٖنَ لَا نَبِىَّ بَعْدِىْ
অর্থঃ আমিই শেষ নবি। আমার পরে কোন নবি নেই। (সহিহ মুসলিম)।
অন্য একটি হাদিসে মহানবি(স.) বলেছেন অচিরেই আমার উম্মতের মধ্যে মিথ্যাবাদীর আবির্ভাব হবে। তারা প্রত্যেকেই নবি হওয়ার দাবি করবে। অথচ আমিই সর্বশেষ নবি। আমার পর আর কোন নবি আসবে না। (আবু দাউদ)
হযরত মুহাম্মদ (স.) কে খাতামুন নাবিয়্যিন হিসেবে বিশ্বাস করা ইমানের অন্যতম অঙ্গ। তাঁর পরবর্তীতে যারা নবি বলে দাবি করেছে সবাই মিথ্যবাদী। আমরা তাদের নবি হিসেবে বিশ্বাস করব না তাদের শিক্ষা আদর্শ বর্জন করব।
আমরা জীবনের সর্বাবস্থায় মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর আদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণ করে চলব।
আশা করি এই পোস্টটি আপনার অনেক ভালো লেগেছে। এর সাথে রিসালাত কাকে বলে? রিসালাতের গুরুত্ব এবং বিশ্বাস বিষয়টিও আপনি বুঝতে পেরেছেন। যদি এই পোস্টটি থেকে কিছু উপকার পান, তাহলে আপনার বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
- রিসালাত সম্পর্কে প্রতিবেদন
- রিসালাত শব্দের উৎপত্তি
- রিসালাত wikipedia
- রিসালাত সম্পর্কে একটি এক পাতার প্রতিবেদন তৈরি করে তা শ্রেণিতে উপস্থাপন করো
- রিসালাত সম্পর্কে এক পাতার প্রতিবেদন
- আখিরাত কাকে বলে
- নারায়ে রিসালাত অর্থ কি
- রিসালাতের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর