অ্যালিফেটিক যৌগ কাকে বলে? অ্যালিফেটিক যৌগের শ্রেণীবিভাগ।: আসসালামু আলাইকুম, আমি লিছা, আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা। আমি জানি আপনারা “অ্যালিফেটিক যৌগ কাকে বলে? অ্যালিফেটিক যৌগের শ্রেণীবিভাগ।” বিষয়ে ধারণা নিতে অনলাইনে সার্চ করছেন। তাহলে আপনি এখন সঠিক পোস্ট এ আছেন। এখানে আপনি এই বিষয় সম্পর্কে সব জানতে পারবেন। তো আসুন আমরা জেনে নিই।
অ্যালিফেটিক শব্দটির অর্থ চর্বিজাত। গ্রিক শব্দ ‘অ্যালিফার’ অর্থাৎ চর্বি থেকে এটি এসেছে। চর্বিজাত হউক বা না হউক সকল মুক্ত শিকল হাইড্রোকার্বন ও সম্পৃক্ত চাক্রিক হাইড্রোকার্বন এবং তাদের জাতককে অ্যালিফেটিক যৌগ বলে। যেমন– CH3-CH3 (ইথেন), CH3-CH2-OH (ইথানল), সাইক্লোপ্রপেন ইত্যাদি।
গঠনের উপর ভিত্তি করে অ্যালিফেটিক যৌগসমূহকে আবার দু'ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:ক. মুক্ত শিকল অ্যালিফেটিক যৌগ ও খ. বদ্ধ শিকল বা চাত্রিক অ্যালিফেটিক যৌগ।
ক. মুক্ত শিকল অ্যালিফেটিক যৌগ : যে সকল অ্যালিফেটিক যৌগের অণুতে কার্বন পরমাণুসমূহ পর পর যুক্ত হয়ে একটি শিকল গঠন করে এবং যার প্রান্তদ্বয় পরস্পর মিলিত না হয়ে উন্মুক্ত থাকে তাদেরকে মুক্ত শিকল অ্যালিফেটিক যৌগ বলে। যেমন, পেন্টেন : CH3-CH2-CH2-CH2-CH3
মুক্ত শিকল যৌগসমূহ পুনরায় দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত। যথা:
(i) সরল শিকল যৌগ ও
(ii) শাখায়িত শিকল যৌগ।
(i) সরল শিকল যৌগ : যে সকল মুক্ত শিকল যৌগের অণুতে কোন কার্বন পরমাণু সর্বাধিক অপর দুটি কার্বন পরমাণুর সাথে যুক্ত থাকে তাদেরকে সরল শিকল যৌগ বলে। যেমন, বিউটেন : CH3-CH2-CH2-CH3
(ii) শাখায়িত শিকল যৌগ : যে সকল যৌগের অণুতে অন্তত একটি কার্বন পরমাণু দু’য়ের অধিক কার্বন পরমাণুর সাথে যুক্ত থাকে তাদেরকে শাখায়িত শিকল যৌগ বলে। যেমন, আইসো-বিউটেন
মুক্ত শিকল যৌগ তথা সরল ও শাখায়িত শিকল যৌগসমূহ বন্ধন প্রকৃতি অনুসারে দু’প্রকার। যথা– সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত যৌগ।
সম্পৃক্ত যৌগ : যে সকল সরল শিকল যৌগের অণুতে সকল কার্বনের পরমাণু একক তথা সিগমা বন্ধন দ্বারা যুক্ত তারা সম্পৃক্ত যৌগ নামে পরিচিত। যথা– প্রপেন : CH3-CH2-CH3
অসম্পৃক্ত যৌগ : যে সকল মুক্ত শিকল যৌগের অণুতে অন্তত দুটি কার্বন পরমাণু দ্বি বা ত্রিবন্ধন দ্বারা পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে তাদেরকে অসম্পৃক্ত যৌগ বলে। যথা:
প্রপিন : CH3-HC=CH2, প্রপাইন : CH3-C≡CH
খ. বদ্ধ শিকল বা চাক্রিক অ্যালিফেটিক যৌগ : এরা অ্যালিসাইক্লিক যৌগ নামেও পরিচিত৷ যে সকল অ্যালিফেটিক জৈব যৌগের অণুতে পরমাণুসমূহের পর পর সংযুক্তির ফলে গঠিত শিকলের প্রান্তদ্বয় যুক্ত হয়ে চক্র বা বলয় গঠন করে তাদেরকে বদ্ধ শিকল বা অ্যালিসাইক্লিক যৌগ বলে।
অর্থাৎ, অ্যালিফেটিক ধর্মসম্পন্ন চাক্রিক বা সাইক্লিক যৌগকে অ্যালিসাইক্লিক (Aliphatic + Cyclic) যৌগ বলে। যেমন : সাইক্লোহেক্সেন।
অ্যালিফেটিক যৌগ ও অ্যারোমেটিক যৌগের মধ্যে পার্থক্য
অ্যালিফেটিক যৌগ ও অ্যারোমেটিক যৌগের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেওয়া হলোঃ
অ্যালিফেটিক যৌগ
১. অ্যালিফেটিক যৌগ প্রধানত মুক্ত শিকলবিশিষ্ট।
২. অ্যালিফেটিক যৌগ সম্পৃক্ত বা অসম্পৃক্ত হতে পারে।
৩. অ্যালিফেটিক যৌগে কার্বনের পরিমাণ কম থাকে।
৪. অ্যালিফেটিক যৌগে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া সহজে সংঘটিত হয় না।
৫. অ্যালিফেটিক হ্যালাইড অত্যন্ত সক্রিয়।
৬. অ্যালিফেটিক হাইড্রক্সি যৌগ নিরপেক্ষ।
অ্যারোমেটিক যৌগ
১. অ্যারোমেটিক যৌগসমূহ চাক্রিক বা বলয় আকৃতির হয়।
২. সকল অ্যারোমেটিক যৌগ অসমম্পৃক্ত।
৩. অ্যারোমেটিক যৌগে কার্বনের পরিমাণ বেশি থাকে।
৪. অ্যারোমেটিক যৌগে সহজেই প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া ঘটে।
৫. অ্যারোমেটিক হ্যালাইড তুলনামূলকভাবে কম সক্রিয়।
৬. অ্যারোমেটিক হাইড্রক্সি যৌগ অম্লীয়।
আশা করি এই পোস্টটি আপনার অনেক ভালো লেগেছে। এর সাথে অ্যালিফেটিক যৌগ কাকে বলে? অ্যালিফেটিক যৌগের শ্রেণীবিভাগ। বিষয়টিও আপনি বুঝতে পেরেছেন। যদি এই পোস্টটি থেকে কিছু উপকার পান, তাহলে আপনার বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।