কেস স্টাডির কি? | কেস স্টাডির সুবিধা ও অসুবিধা

কেস স্টাডি (case study) কি ? কেস স্টাডির সুবিধা ও অসুবিধা: প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম, স্বাগত জানাচ্ছি আজকের এই কেস স্টাডি (case study) কি ? কেস স্টাডির সুবিধা ও অসুবিধা পোস্টে। আশা করি আপনারা এই পোস্টটি পড়ে কিছুটা হলেও লাভবান হবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। 

আপনারা যদি আমাদের কেস স্টাডির (case study) কি ? কেস স্টাডির সুবিধা ও অসুবিধা পোস্টটি পড়ে এতটুকুও উপকৃত হন তবেই আমাদের কষ্ট সার্থক হবে। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে আজকের বিষয়ে আলোচনা করা যাক।

কেস স্টাডির (case study) কি ? কেস স্টাডির সুবিধা ও অসুবিধা

কেস স্টাডি (case study) কি ? 

যে কোন ঘটনাকে যাচাই করা কিংবা বিচার বিশ্লেষণ করাই হল কেস স্টাডি৷ কোন কিছু ঘটলেই সেটি ঘটনা নাও হতে পারে৷ তবে কোন ঘটনা বলতে সেটির কারণ, ঘটনা এবং ঘটনার ফলাফল বুঝায়৷ কেস স্টাডি এক প্রকার পদ্ধতি আর এ পদ্ধতিতে কোন ঘটনা বা সমস্যা যাচাই করার লক্ষ্যে তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়৷ 

এরপরে সংগৃহীত তথ্যাদি বিশ্লেষণ করা হয়৷ তথ্যাদি বিশ্লেষণান্তে মূল্যায়ন করা হয়৷ এখানে মূল্যায়ন বলতে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ বুঝায়৷ শিক্ষা বিজ্ঞানের প্রেক্ষাপটে কেস স্টাডি শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়ার একটি ফলপ্রসূ পদ্ধতি৷ তবে ব্যবস্থাপনায় কেস স্টাডি সমস্যা সমাধনে কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে৷

কেস স্টাডি কাকে বলে?

আমরা সূচনাতেই বলেছি যে কেস হচ্ছে কোন একটি ঘটনা অবস্থা বা সমস্যার বর্ণনা বিশেষ৷ তবে এটি এমন একটি অবস্থা ঘটনা বা সমস্যার বর্ণনা প্রদান করে যা বাস্তব জগতে একজন ব্যক্তিকে মোকাবেলা করতে হয়েছে এবং যা সম্পর্কে ঐ ব্যক্তিকে চিন্তাভাবনা ও বিচার বিশ্লেষণ করে সমাধানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়েছে৷ 

ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কেস দ্বারা ব্যবস্থাপনা কার্য পরিচালনা করতে গিয়ে একজন ব্যবস্থাপককে বাস্তবে যে পরিস্থিতি বা সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়েছে এবং যে পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তা সমাধান করেছেন এর সুসংবদ্ধ লিখিত বিবৃতিকেই বুঝায়৷ অর্থাৎ কোন শিল্পকারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাস্তবে সংঘটিত ঘটনাবলি বা অবস্থাসমূহের লিখিত বিবরণ বা প্রতিবেদনকে ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কেস বলা হয়।

বস্তুত শিল্পকারখানায় সমস্যার উপর ভিত্তি করে রচিত কেস ব্যবস্থাপনার বাস্তব অভিজ্ঞতার একটি বিকল্প বিশেষ৷ কেস পর্যালোচনা বলতে কেস আলোচনা পদ্ধতিকে বুঝিয়ে থাকে৷ কেসে বর্ণিত সমস্যাটি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সম্পর্কে গভীর অনুভূতি লাভ করা যায় এবং এর মাধ্যমে নতুন ও উন্নততর কার্যক্রমের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে৷ এতে প্রকৃত শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জিত হয়৷ 

মূলত কেস আলোচনা একটি সমবেত ও সমবায়মূলক প্রচেষ্টা যা আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের সৃজনশীল চিন্তধারার তীক্ষ্ণতা ও প্রসারতা বৃদ্ধি করে৷ অধ্যাপক লেটনের মতে কেস পদ্ধতি কাজ করার মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করার সমতুল্য৷ তাঁর ভাষায় কেস পর্যালোচনা পদ্ধতি অভিজ্ঞতার একটি বিকল্প যা স্বল্প সময়ে আয়ও করা যায়৷

কেস স্টাডির উদ্দেশ্য?

কেস পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ হচ্ছে নিম্নরূপঃ
  • কেস পদ্ধতির মৌলিক উদ্দেশ্য হল অধ্যয়নের দায়িত্ব ছাত্রদের উপর বর্তানো যাতে তারা মুখস্থবদ্যার পরিবর্তে সৃজনশীল চিন্তাধারায় মনোনিবেশ করতে পারে৷
  • ছাত্রছাত্রীদের তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি বিষয়বস্তুর বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান দান করা৷
  • আনুষ্ঠানিক শিক্ষার কার্যক্রমের সাথে ব্যবহারিক শিক্ষার প্রচলন করা৷
  • শিল্প ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে উদ্ভূত বিভিন্ন রকমের সমস্যা ঘটনাবলি অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে লিখিত রিপোর্ট বা বিবৃতর ক্ষেত্রে উদ্ভূত বিভিন্ন রকমের সমস্যা ঘটনাবলি অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে লিখিত রিপোর্ট বা বিবৃতির সাহায্যে শিক্ষাদান৷
  • ছাত্রছাত্রীদের উত্তেজনাপূর্ণ অবজ্ঞতা সঞ্জয় এবং বিচার শক্তিতে পরিপক্বতা আনয়ন করা৷
  • কেস পদ্ধতিতে বিবৃত সমস্যা সমাধানের উপায় বা পন্থাকে শিক্ষার্থীর বাস্তব জীবনে পেশাগত ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা।

কেস স্টাডির সুবিধাসমূহ?

কেস স্টাডি এর শিক্ষার বলিষ্ঠাতম হাতিয়ার হিসেবে বর্তমানে স্বীকৃতি লাভ করছে নিম্নে কেস পর্যালোচনা পদ্ধতির সুবিধাসমূহ আলোচনা করা হলঃ
  • কেস হতে কেন ঘটনা বা অবস্থার সার্বিক হৃদয়ঙ্গম সম্ভব হয়৷ ফলে সমস্যার স্বরূপ উদঘাটন ও সেই প্রেক্ষিতে কার্যকর সমাধান বের করা সহজ হয়৷
  • কেসে বর্ণিত ত্যথাবলি বিশ্লেষণ করে একজন ব্যক্তি শিল্প সংগঠন ও পরিচালনা সংক্রান্ত জ্ঞান লাভ করতে পারে৷
  • কেসে উল্লেখিত ঘটনার আলোচনাকালে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক মত বিনিময় হয যা জ্ঞানার্জনের পথকে প্রশন্ত করে৷
  • কেস পর্যালোচনা পদ্ধতি অভিজ্ঞতার বিকল্প হিসেবে কাজ করে৷
  • বাস্তব ঘটনাসমূহ কেস পাঠ করে শিক্ষার্থী স্বল্পর সময়ে অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান অর্জন সক্ষম হয়৷
  • কেস পর্যালোচনার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির বিচার শক্তিতে পরিপক্বতা আসে এবং চিন্তাশক্তির তীক্ষ্ণতা বৃদ্ধি পায়৷
  • শিল্প ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিল বিষয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা কেস স্টাডির মাধ্যমে সম্যক জ্ঞান অর্জন করতে পারে
  • কেস পদ্ধতি স্বাধীনভাবে অথচ সহযোগিতার মাধ্যমে কার্যসম্পাদনের দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করে র
  • কেস পর্যালোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিল্প ব্যবস্থাপনার উপর বাস্তব অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে এতদসংক্রন্ত বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হয়৷
  • সর্বোপরি কেস পদ্ধতিতে সফল ব্যবস্থাপকদের জীবনী এবং কাজের মাধ্যমে সফলতা অর্জনের কাহিনী পাঠ করে নিরাশ না হয়ে নতুন উদ্যমে কাজ করার শক্তি সাহস ও অনুপ্রেরণা লাভ করা যায়৷

কেস স্টাডির অসুবিধাসমূহ?

কেস স্টাডি এর অসুবিধাসমূহ নিম্নরূপঃ
  • এক্ষেত্রে সাফল্য হয় দলনেতার৷
  • শিক্ষার্থীদের মনের উপর এর সাফল্য নির্ভরশীল৷
  • সবক্ষেত্রে কেস পদ্ধতি সুফল প্রদান করে না৷
  • অনেক ক্ষেত্রে মতপার্থক্যের সৃষ্টি হয় যার পরিণতি কখনো কখনো খারাপ হয়৷ কেস পদ্ধতির সাধারণত উপরোক্ত অসুবিধাগুলো পরিলক্ষিত হয়৷

তো বন্ধুরা আশা করি আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের মনোপুত হয়েছে। ‘কেস স্টাডি (case study) কি ? কেস স্টাডির সুবিধা ও অসুবিধা’ এরকম আরো বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমাদের  সাথেই থাকবেন বলে আশা করি। আপনাদের সবার সুস্বাস্থ্য এবং সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করে শুভ বিদায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন